About Us
ইমাম বুখারী ট্রাস্ট -এর পরিচিতি
ইমাম বুখারী ট্রাস্ট ২০১৭ সালের পহেলা অক্টোবর ধলেশ্বরী নদীর তীরবতী পলাশপুরে, আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে। মূলতঃ এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের স্বনামধন্য উলামায়ে কেরাম ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিষ্ঠান- যা শিক্ষা, ইসলামী দাওয়াহ ও সামাজ উন্নয়নমূলক নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলছে।
এই ট্রাস্ট, ইমাম বুখারী জামে মাসজিদ কমপ্লেক্স ও একাডেমিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কাস্টডিয়ান হিসাবে কাজ করছে। দেশের সামগ্রিক শিক্ষা, সুস্থধারার সংস্কৃতি ও নৈতিকতার বিকাশে নানা কার্যক্রম পরিচালনা, তারুণ্য নির্ভর একটি স্মার্ট ও যোগ্য সমাজ গঠন, নানাবিধ সামাজিক কার্যক্রম এবং জান্নাতমুখী সমাজ বিনির্মাণে ইমাম বুখারী ট্রাস্ট বদ্ধপরিকর।
ইমাম বুখারী জামে মাসজিদ কমপ্লেক্স
আলহামদুলিল্ললাহ, ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু ‘আলা রাসূলিল্লাহ, ওয়া ‘আলা আলিহী ওয়া আসহাবিহী ওয়া মানিত্তাবা’আ হুদাহু আজমাইন।
أَحَبُّ الْبِلاَدِ إِلَى اللَّهِ مَسَاجِدُهَا “আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় স্থান হলো মাসজিদ” (সহীহ মুসলিম, হা/১৪১৪)
“আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় স্থান হলো মাসজিদ” এমনটিই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪১৪)। মদীনায় এসে তাই তিনি সর্বপ্রথম মাসজিদ নির্মাণের কাজে হাত দিয়েছিলেন। গড়ে তুলেছিলেন আল-মাসজিদ আন-নাবাবী। ইবাদাতের পাশাপাশি একাডেমিক, প্রশাসনিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বহু কাজে এই মাসজিদ গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছিল। আর দাওয়াহ, তা’লীম ও তারবিয়াত ছিল এই মাসজিদের অন্যতম কার্যক্রম। এজন্যই মাসজিদ ইসলামের অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান।
যা থাকবে ইমাম বুখারী জামে মাসজিদ কমপ্লেক্সে-
ধলেশ্বরী নদীর তীর ঘেঁষে নয়নাভিরাম দৃশ্য সম্বলিত সবুজ শহর পলাশপুরের নিউ ঢাকা সিটিতে অবস্থিত ইমাম বুখারী জামে মাসজিদ কমপ্লেক্স বাংলাদেশ -এ যা থাকবে :
- প্রায় সাড়ে ৯ হাজার স্কয়ারফিটের ছয় তলা বিশিষ্ট ভবন।
- ৩০০০ মুসল্লিদের একত্রে সালাত আদায়ের ব্যবস্থা।
- মহিলাদের জন্য সালাত ও অযুর সু-ব্যবস্থা।
- মাসজিদে আন-নাবাবীর আদলে আন্তর্জাতিক মানের লাইব্রেরি।
- দাওয়া সেন্টার, ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র, ওয়ার্কশপ, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের বিশেষ স্থান।
- ইমাম-খতিবদের ও অতিথিদের জন্য জন্য সুপারিসর আবাস।
- রমাদান মাসে ইতিকাফকারীদের জন্য সুবন্দোবস্থা।
- তাহফিজুল কুরআন, শিশু শিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র।
কুল্লিয়াতুল কুরআনিল কারীম ওয়াদ-দিরাসাতিল ইসলামিয়্যাহ
“কুল্লিয়াতুল কুরআনিল কারীম ওয়াদ-দিরাসাতিল ইসলামিয়্যাহ” উচ্চ মাধ্যমিক, ব্যাচেলর ও মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য হবে। এটি বিশুদ্ধ ধারার একটি উচ্চতর ইসলামী শিক্ষা, গবেষণা ও দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ঢাকার উত্তরায় এর অস্থায়ী ক্যাম্পাস অবস্থিত। সেখানে আরবী ভাষা ও সানাবিয়্যাহ পর্যায়ের ক্লাস ২০২২ সালের জুলাই থেকে শুরু হয়েছে। নিউ ঢাকা সিটিতে ২০২৩ সালের জানুয়ারীতে এর স্থায়ী ক্যাম্পাসের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা যায় ২০২৬ সালের মধ্যে প্রকল্পের স্থায়ী ক্যাম্পাসের কাজ শেষ হবে।
‘কুল্লিয়াতুল কুরআনিল কারীম ওয়াদ-দিরাসাতিল ইসলামিয়্যাহ’ এর বৈশিষ্ট্য :
- মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রখ্যাত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ হতে ডিগ্রিপ্রাপ্ত স্কলার ও শিক্ষাবিদগণের পাঠদান।
- সৌদী আরবের সানাবিয়্যাহ কারিকুলাম ও সৌদী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের কারিকুলামের আলোকে প্রণীত শিক্ষাক্রম।
- উচ্চতর শিক্ষার পথ সুগম করার লক্ষ্যে আরবী ভাষায় দক্ষ করে তোলা।
- আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সাথে একাডেমিক ইকুইভ্যালেন্স।
- উচ্চশিক্ষার জন্য সৌদি আরব, মিশর, মরক্কো, আলজেরিয়া, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ পেতে সহযোগিতা করা।
- আলিমের সিলেবাসের সাথে সমন্বয় করে সানাবিয়্যার সিলেবাস তৈরি এবং বোর্ড পরীক্ষা দেওয়ার সুব্যবস্থা।
- আরবীসহ একাধিক ভাষার বইসমৃদ্ধ ফিজিক্যাল এবং ডিজিটাল লাইব্রেরি।
- ছাত্র ও ছাত্রী উভয়ের জন্য উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সম্পূর্ণ পৃথক ব্যবস্থা থাকবে।
দারুল হাদীস অ্যারাবিক মাদরাসা প্রকল্প :
ইমাম বুখারী ট্রাস্ট -এর অন্যতম একটি প্রকল্প হচ্ছে “দারুল হাদীস অ্যারাবিক মাদরাসা”। এখানে প্রধানত তিনটি সেকশন থাকবেঃ
- প্রাথমিক
- মাধ্যমিক
- উচ্চ মাধ্যমিক
দারুল হাদীস অ্যারাবিক মাদরাসা হবে একটি প্রাইভেট ধারার মাদরাসা। এখানে আরবী, ইংরেজি ও বাংলা তিনটি ভাষার উপরেই গুরুত্ব প্রদান করা হবে।
কারিকুলামে যেসব বিষয় এই মাদরাসার অন্তর্ভুক্ত থাকবে তা হল :
- তা’লীমুল কুরআন
- হিফযুল কুরআন
- ইসলাম শিক্ষা
- ভাষা জ্ঞান (বাংলা, আরবী ও ইংরেজি
- গণিত ও বিজ্ঞান
- সমাজ বিজ্ঞান
- কারিগরী শিক্ষা
☑️ দারুল হাদীস অ্যারাবিক মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত থাকবে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা। ☑️ দশম হতে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত থাকবে জয়েন্ট এডুকেশন সিস্টেম, যাতে শিক্ষার্থীরা উচ্চতর পর্যায়ে যে কোন ডিসিপ্লিনে তাদের শিক্ষা সমাপ্ত করতে পারে। ☑️ ছেলে মেয়ে উভয় প্রকার শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক আবাসিক ও অনাবাসিক উভয় ব্যবস্থাই থাকবে। ☑️ মূল শিক্ষার পাশাপাশি কো-কারিকুলার তথা সহ-পাঠ্যক্রম সংক্রান্ত শিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।
Message from the Chairman
সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আমাদের অহীর জ্ঞান দিয়েছেন এবং সুন্দর-সমৃদ্ধ জীবন দান করেছেন। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক প্রিয়নবী মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর এবং তাঁর পরিবার পরিজন ও সাহাবীগণের ওপর।
২০১৭ সালে ইমাম বুখারী ট্রাস্ট শিক্ষা, সমাজ উন্নয়ন ও দীনি কার্যক্রমকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সর্বপ্রথম প্রকল্প হলো- ইমাম বুখারী জামে মাসজিদ কমপ্লেক্স বাংলাদেশ এবং দ্বিতীয় প্রকল্প হলো- কুল্লিয়াতুল কুরআনিল কারীমসহ একগুচ্ছ একাডেমিক কার্যক্রম। ইসলামের শুরু থেকে মাসজিদ আল-হারাম মক্কা ও মাসজিদ আন-নাবাবী মদীনা, ঈমান-আকীদা, ইবাদত শিক্ষা ও নৈতিকতা শিক্ষা দানের পাশাপাশি জ্ঞানের ও সত্যের প্রচার-প্রসার ও বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। পৃথিবীর সকল মুসলিমদের অত্যন্ত প্রিয় স্থান এবং আদর্শের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে বিবেচিত এ দুটো মাসজিদকে অনুকরণ করে ইমাম বুখারী জামে মাসজিদ কমপ্লেক্স বাংলাদেশ বেশ কিছু কার্যক্রম চালানোর অঙ্গিকার নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। এর সাথে বেশ কিছু একাডেমিক পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। কারণ, জ্ঞানার্জন ও জ্ঞানের সাধনা এবং জ্ঞান বিতরণই একটি জাতির সমৃদ্ধির প্রধান কারণ। অতএব জ্ঞানার্জন ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা ছাড়া কোনো মুসলিম সমাজ কোনোদিক থেকেই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে না। ফলে শিক্ষার্জন এবং শিক্ষাদান সাধারণভাবে সকল জাতির এবং বিশেষভাবে মুসলিম জাতির সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ ও সবচেয়ে বড়ো অগ্রাধিকারযোগ্য বিষয়।
পাশাপাশি সমাজের মানুষের নানামুখী সমস্যাকে সামনে রেখে ইমাম বুখারী ট্রাস্ট সমাজ হিতকর বিভিন্ন কার্যক্রমও হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। সমাজের সকল বয়সী অবহেলিত-বঞ্চিত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক ও মানবিক কর্তব্য। সে চেতনা থেকেই ইমাম বুখারী ট্রাস্ট তার সকল কার্যক্রম পরিচালনা করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। আমরা আশা করছি, এ মহান কাজে মুসলিম সমাজের ভাই-বোনেরা এগিয়ে আসবেন, অংশগ্রহণ করবেন, আমাদের উদ্বুদ্ধ করবেন এবং কার্যক্রমগুলোকে সফল করার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন।
পরিশেষে আল্লাহর কাছে দু'আ করছি, তিনি যেন আমাদের সকল মহৎ প্রচেষ্টা ও মহান কাজগুলো কবুল করেন এবং আত্মগঠন ও সমাজকে আলোকিত করার এই মহান ব্রতকে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছিয়ে দেন।
هذا وصلى الله وسلم على نبينا محمد وعلى وآله وصحبه أجمعين আল্লাহ আমাদের নবী মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর পরিবার ও তাঁর সকল সাহাবীকে রহমত দান করুন।
ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
চেয়ারম্যান
ইমাম বুখারী ট্রাস্ট